১. কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র : কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের অংশ হলো মস্তিষ্ক ও মেরুরজ্জু।
মস্তিষ্ক হলো সমগ্র স্নায়ুতন্ত্রের চালক। মানুষের মস্তিষ্ক করোটির মধ্যে সুরক্ষিত। মস্তিষ্ক মেনিনজেস নামক পর্দা দ্বারা আবৃত। মানুষের মস্তিষ্কের প্রধান অংশ তিনটি। যথা- (ক) গুরুমস্তিষ্ক (খ) মধ্যমস্তিষ্ক (গ) পশ্চাৎ বা লঘুমস্তিষ্ক।
(ক) গুরুমস্তিষ্ক : মস্তিষ্কের প্রধান অংশ হলো গুরুমস্তিষ্ক বা সেরিব্রাম। এটা ডান ও বাম খণ্ডে বিভক্ত। এদের ডান ও বাম সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার বলে। মানব মস্তিষ্কে সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার অধিকতর উন্নত ও সুগঠিত। এই দুইখণ্ড ঘনিষ্ঠভাবে স্নায়ুতন্তু দ্বারা সংযুক্ত। এর উপরিভাগ ঢেউ তোলা ও ধূসর বর্ণের। দেখতে ধূসর বর্ণের হওয়ায় একে ধূসর পদার্থ বা গ্রে ম্যাটার বলে। গুরুমস্তিষ্কের অন্তঃস্তরে কেবলমাত্র স্নায়ুতন্তু থাকে। স্নায়ুতন্তুর রং সাদা। তাই মস্তিষ্কের ভিতরের স্তরের নাম শ্বেত পদার্থ বা হোয়াইট ম্যাটার। শ্বেত পদার্থের ভিতর দিয়ে স্নায়ুতন্তু এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যায়। ধূসর পদার্থের কয়েকটি স্তরে বিশেষ আকারে স্নায়ুকোষ দেখা যায়। এই স্নায়ুকোষগুলো গুরুমস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশে গুচ্ছ বেঁধে স্নায়ুকেন্দ্র সৃষ্টি করে। এগুলো বিশেষ বিশেষ কর্মকেন্দ্র হিসেবে কাজ করে। দর্শন, শ্রবণ, ঘ্রাণ, চিন্তা- চেতনা, স্মৃতি, জ্ঞান, বুদ্ধি, বিবেক ও পেশি চালনার ক্রিয়াকেন্দ্র গুরুমস্তিষ্কে অবস্থিত।
সেরিব্রামের নিচের অংশ হলো- থ্যালামাস ও হাইপোথ্যালামাস। এগুলো ধূসর পদার্থের পুঞ্জ। ক্রোধ, লজ্জা, গরম, শীত, নিদ্রা, তাপ সংরক্ষণ ও চলন এই অংশের কাজ।
(খ) মধ্যমস্তিক : গুরুমস্তিষ্ক ও পনস-এর মাঝখানে মধ্যমস্তিষ্ক অবস্থিত। মধ্যমস্তিষ্ক দৃষ্টিশক্তি, শ্রবণশক্তির সাথেও সম্পর্কযুক্ত।
(গ) পচাৎ বা লঘুমস্তিষ্ক : লঘুমস্তিষ্ক গুরুমস্তিষ্কের নিচে ও পশ্চাতে অবস্থিত। এটা গুরুমস্তিস্কের চেয়ে আকারে ছোট। দেহের ভারসাম্য রক্ষা করা পশ্চাৎ বা লঘুমস্তিষ্কের প্রধান কাজ। এছাড়া লঘুমস্তিষ্ক কথা বলা ও চলাফেরা নিয়ন্ত্রণ করে। এর তিনটি জল-
সেরিবেলাম : পনসের বিপরীতদিকে অবস্থিত খণ্ডাংশটি হলো সেরিবেলাম। এটা অনেকটা বুলন্ত অবস্থায় থাকে। সেরিবেলাম ডান ও বাম দৃঅংশে বিভক্ত।
পাস : পনস লঘুমস্তিষ্কের সামনে ও নিচে অবস্থিত। একে মস্তিষ্কের যোজক বলা হয়। এটা পুরুষস্তিষ্ক, লঘুমস্তিষ্ক ও মধ্যমস্তিষ্ককে সুৰুয়াশীর্ষকের সাথে সংযোজিত করে।
মেলা বা সুক্ষ্মাশীৰ্বক : এটা মস্তিষ্কের নিচের অংশ। সুন্নাশীর্বক পনসের নিম্নভাগ থেকে মেরুরজ্জুর উপরিভাগ পর্যন্ত বিস্তৃত। অর্থাৎ এটা মস্তিষ্ককে মেরুরজ্জুর সাথে সংযোজিত করে। এ জন্য সুরাশীর্বকে মস্তিষ্কের বোঁটা বলা হয়। মস্তিকের এ অংশ হৃৎস্পন্দন, খাদ্যগ্রহণ ও শ্বসন ইত্যাদি কাজ নিয়ন্ত্রণ করে।
কাজ : চার্ট দেখে মস্তিষ্কের চিত্র আঁক। এর কোন অংশ কী কাজ করে তা চিত্রের চিহ্নিত অংশের পাশে লেখ। |
আরও দেখুন...